Header Ads

Image result for header ad

আমার আর আমার স্ত্রী সারিকার একটু আগে ঝগড়া হলো।



আমার আর আমার স্ত্রী সারিকার একটু আগে ঝগড়া হলো। বেদম ঝগড়া। যদিও ঝগড়ার সূত্রপাত ছোট্ট একটা কারণ থেকে। সামান্য মশারী টাঙানোকে কেন্দ্র করে।

সারিকার অভিযোগ আমি না-কি ঘরের কোনো কাজই করি না। সারাদিন খাই আর ভুঁড়ি নাচাই।

অভিযোগ কিঞ্চিত সত্য। পুরোপুরি না। একটা মানুষের বেশী বেশী খিদে লাগাটা কী তার দোষ আপনারাই বলেন?

আর যে মানুষের বেশী খিদে লাগে সে বেশী খাবে। যে বেশী খাবে সে একটু মোটু হবে। আর মোটু মানুষ তো একটু অলস হবেই। এগুলো সাধারণ লজিক। কমন সেন্সরে ব্যাপার-স্যাপার। কিন্তু সারিকার সেই সেন্সটুকুও নেই।

রাগ করে সারিকা আর আমি না খেয়ে বিপরীত মুখো হয়ে শুয়ে আছি। কারো সাথে কারো কোনো কথা নেই। তবে সারিকা মাঝে-মাঝে একা-একাই বকরবকর করছে। আমাকে নানান কথা শোনাচ্ছে। তবে কথাগুলো সরাসরি আমাকে বলছে না। বলছে ভাব বাচ্যে। যেমন বলল- মানুষের তো আমার প্রতি মায়া নেই, সে শুধু আমার সাথে ঝগড়াই করতে জানে। তবে আমি তার কথা ভাবি। টেবিলে খাবার ঢেকে রাখা আছে, সে যেন খেয়ে নেয়। নইলে তো তার আবার সারারাত ঘুম হবে না। সকালে অফিস আছে। সে যেন শুধু শুধু রাত না জাগে। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে।

কথা সত্য। রাতে না খেলে আমার ঘুম হবে না। তবে এখন খেতে যাওয়া যাবে না। গেলেই প্রেস্টিজে লাগবে। ইজ্জত পাংচার।


আরো পড়তে ভিজিট করুন


আমি শুয়ে শুয়ে অপেক্ষা করছি সারিকা কখন ঘুমায়, আর ভাবছি ভাব বাচ্য জিনিসটা একেবারে খারাপ না। সরাসরি কথা না হলেও ভাব ঠিকই বাড়ায়। সারিকার কথাগুলো আমার এখন একেবারে খারাপ লাগছে না। ভালোই। কেমন মিষ্টি মিষ্টি।

সারিকা ঘুমিয়ে পড়েছে। এখন একেবারে নাক ডাকছে। ঘ্র ফুস ফুস, ঘ্র ফুস ফুস।

আমি উঠে গেলাম। পা টিপে টিপে ডাইনিং-এ গেলাম। কিন্তু গিয়ে খাবারের ঢাকনাটা উঠাতেই মেজাজটা গরম হয়ে গেল। কতদিন বলেছি আমার ভাত বাদে আর কিছু ভালো লাগে না।

টেবিলে রুটি রাখা। তা-ও মাত্র দুইটা। আবার সবজি দিয়ে। আমার তো রুটি লাগে চার-পাঁচটা।

আমি দুইটা ডিম ভেজে নিলাম। একটা মামলেট, একটা অমলেট। দুইটা ডিম দিয়ে দুইটা রুটি। ব্যাপারটা বেখাপ্পা। তবে কিছু করার নেই। নইলে আমার কলসি সাইজ উদর শান্ত হবে না।

খেলাম। এখন একটু শান্তি শান্তি লাগছে। পুরো শরীর ঠান্ডা হয়ে এসেছে। সাথে মাথাও। সেই ঠাণ্ডা মাথায় মনে হচ্ছে আমার বউটা একেবারে খারাপ না। আমি শুধু শুধু মাথা গরম করি।

আমার আবার রাতে খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস। নইলে রাতে ঠিকঠাক ঘুম হয় না। একটা হলেও খেতে হয়। তবে মনে মনে আজকে অন্য কিছু ভাবছি। ভাবছি আজকে তো আর সারিকা সামনে নেই। আজকে ইচ্ছামতো খাওয়া যাবে।

বন্ধু আমার রসিয়া, খাটের উপর বসিয়া..গানটা গাইতে গাইতে ফ্রিজের সামনে গেলাম। কিন্তু ওমা, এ কী কান্ড! ফ্রিজে মাত্র একটা মিষ্টি। পুরো ফ্রিজ তন্নতন্ন করে খুঁজলাম। কিন্তু না, কোথাও আর কোনো মিষ্টি নেই।

রাগে জোরে একটা ধাক্কা দিয়ে ফ্রিজটা লাগালাম। তখুনি ব্যাপারটা চোখে পড়ল। সারিকা একটা সাদা কাগজে মার্কার দিয়ে লিখে ফ্রিজের উপর লাগিয়ে গিয়েছে। সেখানে লিখা:

এই মোটু,

আমাকে রেখে তো খুব খেয়ে ফেললা! যতই ডায়েট করি, একটা বার তো ডাক দিতে পারতা?

আর মিষ্টি একটার বেশী খাবা না। অবশ্য খাওয়ার উপায়ও নেই। কোথায় রাখছি তুমি খুঁজে পাবা না।

আর শুনো, খাওয়া-দাওয়া শেষে চুপচাপ এসে মশারীটা লাগাবা। যদি ত্যাদর-ভ্যাদর করছ! আর আমাকে যদি একটা মশাও কামড়ায় কাল সকালে তোমার ভুঁড়ি থেকে সিরিঞ্জ দিয়ে সব রক্ত বের করে রাস্তায় ফেলে দিব। মনে থাকে যেন, মোটু..😛

মোটু


আরো পড়তে ভিজিট করুন

No comments

Powered by Blogger.